নতুন শিক্ষাবর্ষে বই বিতরণে বিলম্ব, এনসিটিবির প্রতিশ্রুতি দ্রুত সমাধানের। প্রতি বছর ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার মাধ্যমে বই উৎসব পালন করা হলেও, এবার কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটেছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং শিক্ষাক্রম সংশোধনের কারণে নির্ধারিত সময়ে বই বিতরণ সম্ভব হয়নি। তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) জানিয়েছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৪৪১টি বই সংশোধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে, যা আজ থেকে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে পিডিএফ আকারে পাওয়া যাবে।
শিক্ষাবর্ষ উদ্বোধন ও দুঃখ প্রকাশ
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে নতুন শিক্ষাবর্ষের উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বলেন, “যদিও প্রথম দিনে বই বিতরণ সম্ভব হয়নি, তবে অনলাইনে পিডিএফ ফরম্যাটে বই সহজলভ্য করায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।”
বই ছাপানোর অগ্রগতি
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ কোটি ৬ লাখ বই ছাপানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে ৩ কোটি ৯৮ লাখ এবং মাধ্যমিক ও ইবতেদায়ি স্তরে ২ কোটি ৮ লাখ বই অন্তর্ভুক্ত।
বই বিতরণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে কিছু উপজেলায় শুরু হয়েছে।
- প্রাথমিক স্তরে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই বিতরণ প্রক্রিয়া চলছে।
- মাধ্যমিক স্তরে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই বিতরণ শুরু হয়েছে।
- দশম শ্রেণির বইগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছাপানো হচ্ছে এবং ১৫ জানুয়ারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
অনলাইন কার্যক্রমের গুরুত্ব
এবারের বই উৎসবে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানোর জন্য অনলাইন বিতরণ ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এনসিটিবি। অধ্যাপক রিয়াজুল হাসান আশ্বাস দেন, “কোনো উপজেলা বা স্কুল বইহীন থাকবে না। প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই না পৌঁছালেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান করা হবে।”
বই ছাপানোর লক্ষ্যমাত্রা
এ বছর ৪ কোটি ৩৪ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ২০২ কপি বই ছাপানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
- প্রাথমিক স্তরের জন্য: ৯ কোটি ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫৫টি বই।
- মাধ্যমিক স্তরের জন্য: ৩০ কোটি ৯৬ লাখ ১২ হাজার ৮৪৭টি বই।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং শিক্ষাক্রম সংশোধনের কারণে বই ছাপানোর কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। তবে এনসিটিবি দ্রুত কার্যক্রম সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অনলাইন সংস্করণ এবং ধাপে ধাপে বিতরণের মাধ্যমে এ সংকটের দ্রুত সমাধান হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।