মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ইরানের সর্বোচ্চ আদালত জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আমির হোসেন মাগসোদলুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। ধর্মীয় অবমাননাসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চালানো হয়।
প্রথমে তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও, পরবর্তীতে ইরানের সুপ্রিম কোর্ট আপিল গ্রহণ করে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন
রোববার (১৯ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ৩৭ বছর বয়সী পপ সংগীতশিল্পী আমির হোসেন মাগসোদলুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে তার আপিল করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
তুরস্ক থেকে গ্রেপ্তার
জানা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে তুরস্কে বসবাস করছিলেন আমির হোসেন। তবে ইরানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট প্রচার এবং ইসলামিক রিপাবলিকের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে ইরানের হাতে তুলে দেয়।
বিচার প্রক্রিয়া
প্রাথমিকভাবে আমির হোসেনকে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু প্রসিকিউটরদের আপত্তির ভিত্তিতে মামলাটি পুনরায় চালু হয়। সুপ্রিম কোর্ট তার বিরুদ্ধে দেওয়া প্রাথমিক রায় পরিবর্তন করে মহানবীকে কটূক্তির দায়ে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করে।
সংগীতশিল্পী ও তার পরিচিতি
ভক্তদের কাছে “টাটালু” নামে পরিচিত আমির হোসেন তার শরীরে থাকা অসংখ্য ট্যাটুর জন্য বিখ্যাত। তিনি সামাজিক মাধ্যমে এই ট্যাটুগুলোর ছবি প্রচার করতেন। তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট তৈরি এবং পতিতাবৃত্তি প্রচারের অভিযোগও আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন 👉 পুলিশ কন্সটেবলের ছেলে থেকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের ডন দাউদ ইব্রাহিমের গল্প
অতীত কার্যক্রম
২০১৭ সালে ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন এই সংগীতশিল্পী। এছাড়া, ২০১৫ সালে ইরানের পারমাণবিক চুক্তির সমর্থনে একটি গান গাইলেও সেই চুক্তি পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাতিল করেছিলেন।
এই রায় ইরানে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে কিনা বা আমির হোসেন আপিলের সুযোগ গ্রহণ করবেন কিনা, তা এখন সময়ের অপেক্ষা।