মমতাময়ী মা, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ নাম। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা খালেদা জিয়া তার দৃঢ় নেতৃত্ব এবং অদম্য সাহসের জন্য স্মরণীয়। আর তার বড় ছেলে তারেক রহমান, যিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মায়ের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা ও আত্মত্যাগের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। তারেক রহমানের মায়ের প্রতি ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ এবং দেশের প্রতি তার অঙ্গীকার, এ তিনটি বিষয় তাকে একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রামে তারেক রহমানের ভূমিকা
খালেদা জিয়া যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সংগ্রাম করছিলেন, তখন তারেক রহমান ছিলেন মায়ের একনিষ্ঠ সহায়ক। বিশেষ করে বিএনপির কঠিন সময়গুলোতে তারেক রহমান দলকে সংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২০০৭-২০০৮ সালের জরুরি অবস্থার সময় বিএনপির বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্রমূলক চক্রান্ত করা হয়েছিল, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারেক রহমান তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তারেক রহমান সবসময় মায়ের পাশে থেকেছেন। মায়ের রাজনৈতিক সংগ্রামে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন এবং দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় নিজের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
মায়ের প্রতি তারেক রহমানের ভালোবাসার প্রকাশ
তারেক রহমান মায়ের প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তা শুধু পারিবারিক আবেগে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং এটি গভীর ত্যাগ ও দায়িত্ববোধের মিশ্রণ। তিনি সবসময় মায়ের সুস্বাস্থ্য, সুরক্ষা এবং সম্মানের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়েছেন। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়া যখন কারাবন্দি ছিলেন, তখন তারেক রহমান তার মায়ের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে সম্পৃক্ত করতে কঠোর পরিশ্রম করেন। বিদেশে অবস্থান করেও তিনি মায়ের মুক্তির জন্য নানা ধরনের কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
মায়ের অসুস্থতার সময়ও তারেক রহমান তার দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে তিনি সবধরনের সহায়তা দিয়েছেন। মায়ের প্রতি তার এই দায়িত্বশীল আচরণ তাকে একজন আদর্শ সন্তান হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে।
আত্মত্যাগের এক অনন্য উদাহরণ
তারেক রহমানের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তার আত্মত্যাগ। তিনি নিজে দেশের বাইরে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন, কিন্তু কখনোই মায়ের প্রতি তার ভালোবাসা বা দায়িত্বে কোনো ঘাটতি দেখা যায়নি। নিজের স্বাচ্ছন্দ্য, ব্যক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, এমনকি নিরাপত্তা ত্যাগ করে তিনি মায়ের মুক্তি এবং দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন।
তারেক রহমানের এই আত্মত্যাগ কেবল তার পরিবারের জন্য নয়, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসেও এক বিরল দৃষ্টান্ত। তিনি সবসময় তার মায়ের আদর্শকে লালন করেছেন এবং নিজের জীবনে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তারেক রহমানের ভূমিকা
খালেদা জিয়ার সংগ্রামের পেছনে যে রাজনৈতিক দর্শন কাজ করেছে, তা হলো দেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করা। তারেক রহমান মায়ের এই আদর্শকে সামনে রেখে দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন, “মায়ের সংগ্রাম আমার পথের দিশা।”
তারেক রহমান মায়ের পাশে থেকে দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করেছেন। তার নেতৃত্বে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো আধুনিকায়ন হয়েছে এবং তিনি দলের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
আরও পড়ুন– তারেক রহমানের জীবন, কর্ম এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা
পারিবারিক বন্ধনের শক্তি
খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের সম্পর্ক কেবল মা-ছেলের সম্পর্ক নয়; বরং এটি এক গভীর মানসিক শক্তির প্রতীক। এই সম্পর্কের মধ্যে একে অপরের প্রতি যে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, এবং দায়িত্ববোধ দেখা যায়, তা সবার জন্য অনুকরণীয়। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও তারা পারিবারিক বন্ধনকে দৃঢ় রাখতে পেরেছেন।
মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং দেশের প্রতি দায়িত্ব
তারেক রহমান সবসময় মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছেন এবং তার নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে। মায়ের প্রতি তার এই শ্রদ্ধা তাকে একজন দায়িত্বশীল নেতায় পরিণত করেছে। তিনি বিশ্বাস করেন, মায়ের সংগ্রাম শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য। এ কারণেই তিনি মায়ের আদর্শকে নিজের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছেন।
মমতাময়ী মা খালেদা জিয়ার প্রতি তারেক রহমানের ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও পারিবারিক অঙ্গনে এক উজ্জ্বল উদাহরণ। মায়ের প্রতি এই ভালোবাসা শুধু আবেগ নয়, বরং দায়িত্ববোধ, আত্মত্যাগ এবং দেশের প্রতি অঙ্গীকারের এক মিশ্রণ। তারেক রহমানের এই দায়িত্বশীল আচরণ এবং ত্যাগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি দিকনির্দেশনা। খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের এই সম্পর্ক এবং ত্যাগ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি প্রেরণাদায়ক অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে।