ইলন মাস্কের স্টারলিংক প্রকল্পের মাধ্যমে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপন করা কৃত্রিম উপগ্রহ ব্যবহার করে সারা বিশ্বে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হচ্ছে। যদিও বাংলাদেশে এই সেবা এখনও চালু হয়নি, তবে এটি চালুর প্রস্তুতি চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে স্টারলিংকের রিসিভার প্রদর্শন করা হয়েছে, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দারুণ সাড়া ফেলেছে।
বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে অনুষ্ঠিত মেলায় রায়ানস কম্পিউটার স্টারলিংকের রিসিভার প্রদর্শন করেছে। এটি বিশ্বের প্রথম বৃহত্তম কৃত্রিম উপগ্রহনির্ভর ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক। এই প্রযুক্তি নিম্ন পৃথিবীপথে স্থাপিত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করে। অনলাইন গেমিং, ভিডিও কলিং এবং স্ট্রিমিংসহ বিভিন্ন কাজের জন্য এটি অত্যন্ত কার্যকর।
স্টারলিংকের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী মোস্তফা জামান জানান, প্রদর্শনের জন্য যন্ত্রটি রাখা হয়েছে, তবে এখনও বাংলাদেশে এর ব্যবহার শুরু হয়নি। তবে দ্রুত এই সেবা চালুর বিষয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আরও পড়ুনঃ স্টারলিংকের নতুন উদ্যোগ
স্টারলিংকের স্ট্যান্ডার্ড কিটের মূল্য ৩৪৯ মার্কিন ডলার, আর মাসিক ফি ১২০ ডলার। এর মাধ্যমে ২৫ থেকে ১০০ মেগাবিট প্রতি সেকেন্ড গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। স্টারলিংকের স্যাটেলাইটগুলো তুলনামূলকভাবে হালকা এবং উন্নত নেভিগেশন সেন্সর সমৃদ্ধ, যার ফলে এটি দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদান করতে সক্ষম। প্রতিটি স্যাটেলাইটে থাকে তিনটি অপটিক্যাল স্পেস লেজার, যা প্রতি সেকেন্ডে ২০০ গিগাবিট ডেটা প্রেরণ করতে সক্ষম।
স্টারলিংক প্রযুক্তির আরেকটি বিশেষ দিক হলো এর স্যাটেলাইটগুলোর নিম্ন কক্ষপথে অবস্থান। যেখানে সাধারণ স্যাটেলাইটগুলো জিওস্টেশনারি কক্ষপথে ৩৫,৭৮৬ কিলোমিটার ওপরে অবস্থান করে, সেখানে স্টারলিংক স্যাটেলাইটগুলো মাত্র ৫৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করে। ফলে লেটেন্সি কম হয় এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
স্টারলিংক প্যাকেজে রিসিভার, কিকস্ট্যান্ড, রাউটার, তার এবং পাওয়ার সাপ্লাই অন্তর্ভুক্ত থাকে। অ্যান্টেনাটি -৩০ ডিগ্রি থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় কার্যকর থাকে এবং ১১০ ডিগ্রি পর্যন্ত বাঁকানো যায়। স্টারলিংক চালাতে ৭৫ থেকে ১০০ ওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় এবং এর ওয়াই-ফাই রাউটারের সঙ্গে ২৩৫টি ডিভাইস সংযুক্ত করা সম্ভব।