মুম্বাই পুলিশ বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ দীক্ষিত গেডামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তের কোনো বৈধ নথিপত্র পাওয়া যায়নি, যা তাকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করার সম্ভাবনা উত্থাপন করেছে। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
আসামির পরিচয় ও তদন্তের অগ্রগতি
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, অভিযুক্তের নাম মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শাহজাদ। তার কাছে কোনো ভারতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি। তদন্তে দেখা গেছে, তিনি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন এবং বিভিন্ন ছদ্মনাম, যেমন বিজয় দাস, ব্যবহার করছিলেন।
ডেপুটি কমিশনার জানান, “আমরা তার কাছ থেকে এমন কিছু সামগ্রী উদ্ধার করেছি, যা ইঙ্গিত করে যে তিনি বাংলাদেশের বরিশালের বাসিন্দা হতে পারেন। তার বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনের আওতায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।”
হামলার প্রেক্ষাপট
গত ১৫ জানুয়ারি রাত ২টার দিকে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে সাইফ আলি খানের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় এক দুর্বৃত্ত। পুলিশের তথ্যমতে, অভিযুক্ত ব্যক্তি বাড়ির পেছনের ফায়ার এক্সিট দিয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় গৃহপরিচারিকা লিমা তাকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে তিনি প্রথমে লিমাকে এবং পরে সাইফ আলি খানকে আক্রমণ করেন।
সাইফ আলি খান ছুরিকাঘাতের শিকার হন, এবং দ্রুত তাকে লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল।
গৃহপরিচারিকার ভূমিকা
গৃহপরিচারিকা লিমা, যিনি গত চার বছর ধরে অভিনেতার পরিবারের সঙ্গে কাজ করছেন, হামলাকারীকে প্রথম শনাক্ত করেন এবং পরিবারের সদস্যদের সতর্ক করেন। লিমার বর্ণনায় জানা গেছে, দুর্বৃত্তের উদ্দেশ্য ছিল অভিনেতার ছোট ছেলে জাহাঙ্গীরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা।
তিনি জানান, “রাত ২টার দিকে সন্দেহজনক শব্দ শুনে আমি জেগে উঠি এবং একজন লোককে বাথরুম থেকে বের হতে দেখি। আমি চিৎকার করলে তিনি আমাকে আক্রমণ করেন।”
আরও পড়ুনঃ- সাইফ আলি খানের বাড়িতে আততায়ীর হামলা: সিসিটিভি ফুটেজে আততায়ীর ছবি প্রকাশ
দেশব্যাপী প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর সাইফ আলি খানের পরিবার এবং বলিউড জগতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিরোধীদলীয় নেতারা মহারাষ্ট্র সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, “যদি একজন হাই-প্রোফাইল ব্যক্তি এভাবে আক্রান্ত হতে পারেন, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
হামলার ঘটনাটি বর্তমানে মুম্বাই পুলিশের উচ্চ-প্রাধান্যের তদন্তের আওতায় রয়েছে। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তকে মহারাষ্ট্রের থানে এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সূত্রঃ Barta Bazar