২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রকাশিত মাধ্যমিকের সপ্তম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা হিসেবে ‘লাখো’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগে একই বইয়ে ৩০ লাখ শহীদের কথা উল্লেখ ছিল। নতুন সংস্করণে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।
পাঠ্যপুস্তক বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, ষষ্ঠ, নবম-দশম এবং প্রাথমিকের তৃতীয় শ্রেণির বইগুলোতেও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। তবে পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে ২৫ মার্চের গণহত্যা নিয়ে একটি অনুচ্ছেদে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের কথা উল্লেখ রয়েছে। অষ্টম শ্রেণির বইতেও ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।
সপ্তম শ্রেণির বইয়ের প্রথম অধ্যায় ‘বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম’-এর শেষে বলা হয়েছে, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।’ তৃতীয়, ষষ্ঠ এবং নবম-দশম শ্রেণির বইগুলোতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে বলে অভিভাবক ও শিক্ষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করছেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য তুলে ধরা শিক্ষার্থীদের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এনসিটিবির ব্যাখ্যা
এ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, “প্রত্যেক বিষয়ের জন্য বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা বিষয়গুলো পরিমার্জন করেছেন। কোথাও ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে তা সংশোধন করা হবে। দ্রুত কাজ করতে গিয়ে কিছু ভুল হতে পারে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবো।”
শিক্ষাবিদরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের মতো জাতীয় গৌরবময় অধ্যায় নিয়ে পাঠ্যপুস্তকে কোনো ধরনের অস্পষ্টতা মেনে নেওয়া যায় না। তারা দ্রুত সংশোধনী এনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার দাবি জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ করে তা পুনরায় বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন মহল।