বাংলার খাদ্যসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো মাছ। আর মাছের সঙ্গে কাঁটার সম্পর্কও অঙ্গাঙ্গী। অনেকেই মাছের কাঁটা এড়িয়ে চলেন, আবার কেউ কেউ চিবিয়ে খেতেও পছন্দ করেন। তবে মাছের কাঁটা কি সত্যিই শরীরের জন্য উপকারী?
মাছের কাঁটায় পুষ্টিগুণ
গবেষণায় দেখা গেছে, মাছের কাঁটায় রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে—
- ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- সোডিয়াম: শরীরের জলধারণ ক্ষমতা ও স্নায়ুর কার্যক্রমে সহায়ক।
- ফসফরাস: হাড় ও কোষের সুস্থতা রক্ষায় কার্যকর।
- কোলাজেন: ত্বক ও সংযোগকারী টিস্যুর উন্নতিতে সহায়ক।
এক গবেষণায় বিজ্ঞানী এমকে মালদে উল্লেখ করেছেন, “মাছের কাঁটায় উচ্চমাত্রার খনিজ উপাদান রয়েছে যা প্রাকৃতিক ক্যালসিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস হতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এই কাঁটা যুক্ত করা গেলে তা পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করতে পারে।”
মাছের কাঁটার উপকারিতা
১. হাড় মজবুত করে: এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
২. দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষা: খনিজ উপাদান দাঁতের গঠনে সহায়ক।
৩. খনিজের ঘাটতি পূরণ: মাছের কাঁটা থেকে তৈরি পাউডার ক্যালসিয়াম ও সোডিয়ামের ঘাটতি মেটাতে কার্যকর।
আরও পড়ুনঃ লাশ কাটাকে কেন ময়নাতদন্ত বলা হয়?
কাঁটা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
মাছের কাঁটার পুষ্টিগুণ অনেক হলেও খাওয়ার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
- গলায় আটকে যাওয়ার ঝুঁকি: ছোট বা বড় কাঁটা গলায় আটকে গেলে মারাত্মক সমস্যা হতে পারে।
- ফর্মালিনের প্রভাব: বাজারে ফর্মালিনযুক্ত মাছ পাওয়া যায়, যা কাঁটার পুষ্টিগুণ কমিয়ে দিতে পারে।
- প্রস্তুত পদ্ধতি: কাঁটা ভালোভাবে সেদ্ধ বা রান্না করে খাওয়া উচিত, যাতে তা সহজে হজম হয়।
বিশেষ সতর্কতা
ছোট মাছের কাঁটা নরম ও সহজে হজমযোগ্য হলেও বড় মাছের কাঁটা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কাঁটা সঠিকভাবে রান্না করে বা গুঁড়া করে খাবারে মেশালে তা আরও নিরাপদ এবং পুষ্টিকর হয়ে ওঠে।
মাছের কাঁটা শুধু অপচয়ের বস্তু নয়; এটি প্রকৃতপক্ষে পুষ্টির একটি চমৎকার উৎস। সঠিকভাবে প্রস্তুত করে খেলে এটি শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে কাঁটা খাওয়ার সময় সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। খাদ্যাভ্যাসে সচেতন থেকে মাছের কাঁটার পুষ্টিগুণ উপভোগ করা সম্ভব।